আয়ুর্বেদ - শরীর,মন এবং আত্মার ঐকতান
জীবনের ও দীর্ঘায়ুর বিজ্ঞান আয়ুর্বেদ প্রাচীন ভারতবর্ষে প্রায় 5000 বছর পূর্বে উদ্ভুত হয়। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন স্বাস্থ্য পরিচর্যা পদ্ধতি যা চিকিৎসা ও দর্শনের সুগভীর চিন্তা ভাবনেগুলিকে কে এক জায়গায় মিলিয়েছে। প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদ পৃথিবীর মানুষকে একইসাথে শারীরিক, মানসিক এবং অধ্যাত্মিক উন্নতির পথ দেখিয়েছে। এই অদ্বিতীয় পদ্ধতিটি আজকের চিকিৎসা শাস্ত্রের একটি অপরিহার্য শাখা যা সম্পুর্নভাবে একটি প্রাকৃতিক পদ্ধতি এবং যা দেহের সঠিক সাম্য আনার জন্য ভাতা, পিত্ত এবং কফের উপর নির্ভর করে রোগ নিরূপণ করে।
কেরালা আয়ুর্বেদের দেশ
দেশীয় ও বিদেশীয় আক্রমণ, অনধিকার প্রবেশ অতিক্রম করে নিরাবিচ্ছিন্ন ভাবে কেরালা তার আয়ুর্বেদকে বাঁচিয়ে রেখেছে। শয়ে শয়ে বছর ধরে কেরালার মানুষজন যে কোন ধরণের রোগ থেকে মুক্তির জন্য আয়ুর্বেদিক বৈদ্যর( পরম্পরাগত ভাবে যারা আয়ুর্বেদ চিকিৎসা করে) উপর নির্ভর করেছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে কিংবদন্তী স্বরূপ আটটি বৈদ্য( অষ্ট বৈদ্য) পরিবার এবং তাদের উত্তরসূরিরা সমগ্র কেরালা রাজ্যের মানুষদের চিকিৎসা করেছে।অন্যান্য প্রদেশে আয়ুর্বেদ যেমন একটি বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি কিন্তু কেরালায় তা প্রধান চিকিৎসা পদ্ধতি। সত্যি কথা বলতে আজকের ভারতে কেরালাই একমাত্র প্রদেশ যেখানে অখণ্ড মননিবেশ সহকারে এই পদ্ধতির চিকিৎসা করা হয়।
যেহেতু মানুষের চিকিৎসার জন্য একমাত্র এই পদ্ধতিটিই চালু ছিল সেহেতু কেরালার বৈদ্যদের আয়ুর্বেদের তত্ত্ব ব্যাখ্যা করতে হয়েছিল এবং দৈনন্দিন রোগ নিরাময়ের জন্য কার্যকরি পদ্ধতি আভিযোজিত করতে হয়েছিল। তাই আয়ুর্বেদের সমকালীন প্রত্যেকটি পদ্ধতি এবং প্রটোকল কেরালা বা তার আশেপাশে উদ্ভুত হয়েছে।
প্রকৃতির আশীর্বাদ
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় রোগ নিরাময়ের জন্য বা স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য যে প্যাকেজগুলি আছে তার জন্য কেরালার সুসমঞ্জস আবহাওয়া, প্রাকৃতিক জঙ্গলের প্রাচুর্য এবং ঠান্ডা ঋতু বর্ষা খুবই উপযোগী। কেরালা সম্ভবত পৃথিবীর কয়েকটি অঞ্চলের মধ্যে একটি যেখানে নিরবিচ্ছিন্ন বৃষ্টির সময় 24-28 ডিগ্রী তাপমাত্রা বজায় থাকে। বাতাসে ও দেহের চামড়ার উপর আদ্রতার উপস্থিতি প্রাকৃতিক ওষুধের চুরান্ত পর্যায়ে কার্যকরী হওয়ার পক্ষে আদর্শ। কেরালায় ওষধি গাছ জন্মায় অসংখ্য পরিমাণে এবং তা চিকিৎসার জন্য আয়ুর্বেদিক ওষুধের প্রয়োজন নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে যুগিয়ে চলে। একই ক্ষমতার এক একটি ভেষজ প্রত্যেকটি ঋতুতেই মেলে। মাটির ক্ষারীয় ঊপাদান অন্যান্য উপাদানের চেয়ে অনেক বেশী মাত্রায় আয়ুর্বেদিক ওষুধের ক্ষমতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
কেরালায় আয়ুর্বেদের সুবিধা
ঋষি ভাগবত সংকলিত অষ্টাঙ্গহৃদয়ম আয়ুর্বেদের একটি বাস্তবসম্মত ও ব্যবহার বান্ধব সংকলন যা কেরালার মত পৃথিবীর আর কোথায়ও এত পরিব্যাপ্তভাবে ব্যাবহার করা হয়নি। কেরালার বৈদ্যরা যারা সমকালীন প্রণালীবদ্ধ আয়ুর্বেদে দক্ষ যা অনেক বিদ্বানই মনে করেন আয়ুর্বেদের পথিকৃৎ চরক ও সুশ্রুত কৃত সংহিতার উন্নত সংস্করণ। কেরালার কাশ্য চিকিৎসা ( মিশ্রিত তরলের সাহায্যে চিকিৎসা) একটি নির্দিস্ট মানের প্রটোকল যা কাশসেয়াম রা মেনে চলে তা বিজ্ঞানসম্মতভাবে শ্রেণিবদ্ধ ও সংগঠিত করা হয়েছে বিভিন্নপ্রকার রোগের চিকিৎসার প্রয়োজন অনুসারে। কেরালার বৈদ্যরাই অভায়াঙ্গমের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট গুনে সর্বপ্রথম আলো ফেলেছে যা কিনা কিছির আধিক্য বাড়িয়েছে। পৃথিবীর যে কোন অঞ্চলের চেয়ে বেশী সংখ্যক আয়ুর্বেদ কলেজ এবং সবচেয়ে বেশী সংখ্যক চিকিৎসক থাকায় কেরালায় আয়ুর্বেদের বিজ্ঞান সম্মত গবেষণার এক পরম্পরা তৈরি হয়েছে।
লাইফ স্টাইল হিসেবে আয়ুর্বেদ
কেরালায় আয়ুর্বেদ শুধুমাত্র একটি স্বাস্থ্যবিধি পদ্ধতি নয় তা জীবনের প্রত্যেকটি দিকের এক অপরিহার্য অঙ্গ। প্যারালাইস হয়ে যাওয়া রুগীর হাঁটা বা আরোগ্য হওয়ার কোনরূপ সম্ভবনা নেই এমন রোগ থেকে আরোগ্য এরকম অনেক অলৌকিক ঘটনা আজও কেরালায় ঘটে যা বৈদ্যয়ারদের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা ও বিস্ময় তৈরি করে।
ডিপার্টমেন্ট অব ট্যুরিজম, গভর্মেন্ট অব কেরল, পার্ক ভিউ, কেরল, ইন্ডিয়া- 695033
ফোনঃ +91 471 2321132, ফ্যাক্সঃ + 91 471 2322279, ইমেল: info@keralatourism.org.
সমস্ত স্বত্ব © কেরল পর্যটন 2020. কপি রাইট | ব্যবহারের নিয়ম | কুকি নীতি | যোগাযোগ করুন
আই এন ভি আই এস মাল্টিমিডিয়া দ্বারা বিকাশকৃত এবং রক্ষিত।